বুদ্ধিতে বাজিমাত...(Sci-fi)
বুদ্ধিতে বাজিমাত...
এলেক্স
বর্তমান পৃথিবীর সবচেয়ে আলোচিত একজন পদার্থবিজ্ঞানী। সে অনেকদিন ধরে রিসার্চ করছে
মঙ্গল গ্রহ আমাদের বসবাস উপযোগী কি-না। মমঙ্গলের মাটির নীচে নাকি পানি পাওয়া গেছে।
প্রয়োজনীয় অক্সিজেনেরএকটু ঘাটতি থাকলেও সেটা সরবরাহের ব্যবস্থা আছে। এ নিয়ে তিনি
অনেকদিন ধরে ঘাটাঘাটি করছেন।
কিন্তু
এটা পৃথিবীতে নয় ; কিউট্রেসে। এটি একটি মহাকাশ সম্পর্কিত গবেষণাকেন্দ্র, যা পৃথিবী ও মঙ্গলের মধ্যবর্তী স্থানে অবস্থিত।
তার সাথে কাজ করতো স্মিথ ও জাহিন। স্মিথ মহাকাশ
ইন্জিনিয়ারিংএ ডক্টরেট করেছে আর জাহিন একজন খুবই ভালো কেমিস্ট। দুজনেই খুব
বুদ্ধিমান। তাদের সাথে আগে আরো একজন লোক কাজ করত, তার নাম
ফ্রেকিউ। সে খুবই বুদ্ধিমান লোক ছিল। অনেক আগে সে এলেক্স এর ভাল বন্ধু ছিল কিন্তু
কেন জানি না এলেক্স আলোচিত হওয়ার পর সে আর এলেক্স কে সহ্য করতে পারত না। খুব ঘৃণা
করতো। হঠাৎ একদিন ফ্রেকিউ নিখোঁজ হয়ে যায়এবং তার সাথে নিখোঁজ হয় কিছু গুরুত্বপূর্ণ
যন্ত্রপাতি আর একটি উচ্চ ক্ষমতাশালী লেসার সম্পন্ন স্পেসশী। এর পরে তাকে আর দেখা যায়নি।
সে কথা
বাদ দেয়া যাক, আসল
কথায় আসি। আজ ৭ বছর ধরে এলেক্স কিউট্রেসে কর্মরত আছেন। তাই তিনি কিছুদিনের জন্য
অবসর নিতে চান কিন্তু কোনভাবেই জাহিন আর স্মিথ কে এখানে একা রেখে যাওয়ার ভরসা
পেলেন না। স্মিথ এলেক্সকে বলল,
" স্যার, আপনি কিছুদিনের জন্য পৃথিবী থেকে ঘুরে
আসুন। কিছুদিনেরই তো ব্যাপার। আমরা সব সামলে নিব।"
জাহিন বলল, " স্যার, আপনি
নিশ্চিন্তে যেতে পারেন।"
"
বেশ, তবে তোমরা স্পেসশীপ প্রস্তুত
কর। আমি ১০ মিনিটের মধ্যে রেডি হয়ে আসছি।"
এলেক্স ইতোমধ্যে পৃথিবীর উদ্দেশ্যে রওনা দিয়ে
দিয়েছে। সে কিউট্রেসে জাহিন আর স্মিথ এর সাথে যোগাযোগ অব্যাহত রাখে। হঠাৎ এলেক্স রাডারে
দেখতে পেল দূরবর্তী কোন একটা জিনিস তার দিকে এগিয়ে আসছে। এলেক্স, জাহিন আর স্মিথ কে এই সম্পর্কে বললে তারা খুব দ্রুতগামী একটি স্পেসশীপে
করে এলেক্স এর কাছে পৌছায়। এলেক্স তাদের দেখাল যে
কিছু একটা তাদের দিকে ধেয়ে আসছে।
জাহিন বলল, " স্যার, আপনি চিন্তা করবেন না। আমরা আপনার সাথেই আছি।"
কিছুক্ষণ
পর দেখা গেল ধেয়ে আসা বস্তুটি আর কিছু নয় ফ্রেকিউ এর সাথে নিখোঁজ হওয়া সেই
স্পেসশীপ।
স্মিথ
অবাক হয়ে বলল এটা আমি কি দেখলাম!"
ফ্রেকিউ
স্পেসশীপ ফুটো করে এলেক্স, জাহিন আর স্মিথ কে আটক করে নিল। জাহিন জিজ্ঞাসা করল,
" আপনি আমাদের আটক করেছেন কেন? আমাদের ছেড়ে
দিন" "তোমাদের দিয়ে আমি কিছু কাজ করাব আর এই এলেক্স কে আমি শূন্যে ছেড়ে
দেব।"
স্মিথ
প্রশ্ন করল," কিন্তু কেন? এলেক্স স্যার কি করেছেন?"
" এর জন্য আমাকে অনেক কষ্ট পেতে হয়েছে। এর জন্য আমি সবচেয়ে আলোচিত
পদার্থবিজ্ঞানী হতে পারিনি।
এলেক্স
ফ্রেকিউ কে বলল, "এ তুই কি বলছিস?"
"হ্যাঁ, আমি ঠিকই বলছি।"
এরপর তাদের সবাইকে ফ্রেকিউ পিকাসা নামক তার
নিজের মহাকাশ গবেষণাকেন্দ্রে নিয়ে গেল।
সেখানে সব জাগায় সিসি ক্যামেরা ও মাইক্রফোন
লুকায়িত ছিল তাই কোন রকম অপরাধ করার সুযোগ ছিল না। এলেক্স কে একটা আলাদা রুমে
বন্দি করা হল। স্মিথ কে দেওয়া হল জ্বালানি তৈরি করার জন্য ইউরেনিয়াম এর আইসোটোপ৫
আলাদা করার কাজ।
একঁঘেয়ে
রুটিন বাঁধা কাজ। সে শুধু সুযোগ এর অপেক্ষায় থাকে- নির্দিষ্ট ভরের ইউরেনিয়াম ২৩৫
আলাদা করে 'ক্রিটিক্যাল
মাস'৬ করে ফেলতে পারে কিনা। কারণ সে জানত যে কাজ শেষে
ফ্রেকিউ তাকেও মেরে ফেলবে। তাই মরার হলে একসাথে ফ্রেকিউকে নিয়েই মরবে। জাহিন কে দেয়া হয়
কন্ট্রোলরুম পরিচালনার কাজ। স্মিথকে জাহিন এর সাথে কথা বলার সুযোগ দেওয়া হত না।
কিন্তু একদিন স্মিথ সবার চোখ ফাকি দিয়ে জাহিন এর সাথে দেখা
করে তার আইডিয়া জাহিন এর সাথে শেয়ার করে। জাহিন সম্মতি প্রকাশ করলে তারা প্ল্যান
মোতাবেক কাজ করতে থাকে। স্মিথ কন্ট্রোলরুমে এসে চেইন-রি-অ্যাকশন কন্ট্রোল করার জন্য যে
ক্যাডমিয়াম রড থাকে তা কেটে ছোট করে ফেলে। এখন তো আর চেইন-রি-অ্যাকশন কন্ট্রোল করা
যাবে না। আর যে চেইন-রি-অ্যাকশন কন্ট্রোল করা যায় না তাকে বলে এটম বোম। পিকাসার রি
অ্যাক্টর এখন এটম বোমে পরিণত হয়েছে। এতক্ষণে ফ্রেকিউ সব জানতে পেরে গিয়ে
কন্ট্রোলরুম আসে আর বলে,"সান অব বীচ, তোদের এত্ত বড় স্পর্ধা। আজতো আমি
তোদের মেরেই ফেলব।"
স্মিথ বলল,"আমাদের মরার ভয় দেখিয়ে
কোন লাভ হবে না।"
ফ্রেকিউ এলেক্স কে নিয়ে এসে বলল, " আজ তোদের এলেক্স স্যার
কে মারব। তবে তো তোরা ভয় পাবি।" জাহিন বলল," ১০
মিনিটের মধ্যে এখানে একটা বড় বিস্ফোরণ হবে। পিকাসা পুরো নিশ্চন্হ হয়ে যাবে।"
ফ্রেকিউ খুব তারাতাড়ি করে তার স্পেসশীপের দিকে যেতে লাগল। জাহিন ফ্রেকিউ কে ডাক
দিয়ে বলল, "কোন লাভ নেই। তোমার স্পেসশীপ চালু করতেও
কমপক্ষে ৫ মিনিট সময় লাগবে। " আরে মূর্খ, আামার
স্পেসশীপ চালু করতে ৫ সেকেন্ড সময়ও লাগে না।" এটা বলে ফ্রেকিউ স্পেসশিপে করে
চলে গেল। ফ্রেকিউ পিকাসাতে স্মিথ এর সাথে যোগাযোগ করে বলল যে এইবার অনুভব করবে
মৃত্যুযন্ত্রনার সাধ।
স্মিথ বলল, " তুমি যেই স্পেসশীপে যাচ্ছ, সেটা কিছুক্ষণের মধ্যে বিস্ফরিত হবে।আমি পিকাসা কে নয়, তোমার স্পেসশীপকে এটম বোম বানিয়ে দিয়েছি।"
পিকাসার রাডারে দেখা গেল যে কাছেই একটা বিস্ফোরণ
হয়েছে।
শাহারিন আক্তার মিম
পাগলা উচ্চ বিদ্যালয়
No comments