সংখ্যার রাজত্বে
সংখ্যার রাজত্বে
প্রতিটি সংখ্যা
পদ্ধতিতে যে কয়টি অংক ব্যবহার করা হয় সেই সংখ্যাকে ঐ নির্দিষ্ট সংখ্যা পদ্ধতির
ভিত্তি (base) বলা হয়।
যেমন দশমিক
সংখ্যা ব্যবস্থায় ০ থেকে ৯ এই ১০টি “অংক” ব্যবহার করা হয় বলে আমরা একে দশমিক
সংখ্যা পদ্ধতি বলি।ধারণা করা হয় মানবসভ্যতার বিকাশের শুরুর দিকে গণনার তাগিদে
মানুষ যখন গুণতে শুরু করে তখন থেকেই ব্যপক জনপ্রিয়তা লাভ করে এই দশমিক সংখ্যা
পদ্ধতি,মানুষের হাতের দশটি আঙ্গুলই হয়তো এর কারণ।
দশমিক পদ্ধতির
কথা বাদ দিলে তারপরেই চলে আসে বাইনারি বা দ্বিমিক সংখ্যা পদ্ধতির কথা।প্রোগ্রামিং
এর তাগিদে বাইনারি এখন দশমিক সংখ্যা পদ্ধতির সাথে পাল্লা দেয় বৈকি!
এছাড়াও
অকটাল(১৬ ভিত্তিক সংখ্যা পদ্ধতি),হেক্সাডেসিমাল(৮ ভিত্তিক সংখ্যা পদ্ধতি) সহ আরো
যে কত সংখ্যা পদ্ধতি আছে,তা বলে শেষ করা যাবে না।তবে এর মাঝে অকটালের কথা আলাদা
করেই বলতে হয়।ক্যালিফোর্নিয়া ও মেক্সিকোর কিছু অঞ্চলে এখনো এ পদ্ধতি ব্যবহার
হয়।কারণ গণনার কাজে তারা হাতের আঙ্গুল ব্যবহার করার পরিবর্তে আঙ্গুলের মাঝের ফাকা
৮টি স্থান ব্যবহার করে।
জ্ঞানের কথা
অনেক হলো,এবার কাজের কথা।খুবই সাধারণ একটা সমস্যা দিয়ে শুরু করা যাক।
সমস্যা
১।বাইনারি পদ্ধতির ৫ম সংখ্যা কত?
খুব সহজেই
হিসাব করে বের করে ফেলে যায়।প্রথম সংখ্যা 0,তারপর 1,এভাবে 10,11,100।
অর্থাৎ
বাইনারির ৫ম সংখ্যা 100।
কিন্তু যদি বলে
35তম সংখ্যাটি কত?বা 100তম সংখ্যা কত?
তখন কিন্তু
এভাবে গুণে গুণে বের করা মোটেও কাজের কথা না।এজন্য সুন্দর একটি উপায় রয়েছে।নিচে 35কে
বাইনারি পদ্ধতিতে প্রকাশ করা হলো।
তাহলে 35 কে বাইনারি পদ্ধতিতে প্রকাশ করলে আসছে 100011.
সুতরাং,(35)10 =(100011)2.
ব্যাপারটা কি বুঝতে পারলে?2 দ্বারা বার বার ভাগ দিচ্ছি আর
ভাগশেষটাকে পাশে লিখে রাখছি,যতক্ষণ না পর্যন্ত ভাগফল শূন্য আসছে।এই ভাগশেষের
অংকগুলোই আমাদের প্রয়োজন।এরপর ভাগশেষ গুলোকে নিচ থেকে ক্রমাণ্বয়ে লিখে গেলেই
কাংখিত সংখ্যা পাওয়া যাবে।
এই পদ্ধতি সব ক্ষেত্রেই কার্যকর।যেমন আমরা যদি এখন (47)10 কে যদি 4 ভিত্তিক
সংখ্যা পদ্ধতিতে প্রকাশ করতে চাই,তাহলে আসবে এরকম,
অর্থাৎ 47(10)=(233)4
এখন কথা হচ্ছে যদি (233)4 দেয়া হয় এবং বলা হয় একে দশমিক পদ্ধতিতে প্রকাশ করতে তাহলে আমরা
কি করব?
তখন কি 233 কে 10 দ্বারা ভাগ করতে থাকব?করে দেখো তো কত আসে?আবার
233-ই আসছে,তাই না?
ভয় নেই,তোমার পদ্ধতি ঠিক আছে,তবে সমস্যা হচ্ছে এই পদ্ধতির
আবিষ্কার হয়েছে দশমিক সংখ্যাকে অন্য যেকোন সংখ্যা পদ্ধতিতে প্রকাশ করার
জন্য।কিন্তু অন্য যেকোন সংখ্যা পদ্ধতিকে এর মাধ্যমে দশমিক সংখ্যা পদ্ধতিতে প্রকাশ
করা যাবে না।অর্থাত,ইনভার্স করা যাবে না।
তাহলে উপায়????
উপায় একটা আছে,যারা আগ্রহী তারা একটু চিন্তা-ভাবনা করতে পার
যে,উপরে শেখানো পদ্ধতি কেন কাজ করে?যদি একবার বুঝতে পারো কেন কাজ করে তাহলেই বের
করতে পারবে কীভাবে অন্য যেকোন সংখ্যা পদ্ধতিকে
দশমিক সংখ্যা পদ্ধতিতে প্রকাশ করা যায়।
আমি কেবল উপায়টা বলে দেই,চিন্তা ভাবনা চলতে থাকুক।
(233)4 কে আমরা দশমিক পদ্ধতিতে প্রকাশ করব।
(3*4^0)+(3*4^1)+(2*4^2)= 16+12+3=47.
এখানে কি করেছি?কেবল ডান পাশের অংকগুলোকে নিয়ে 4 দ্বারা (যখন যে
পদ্ধতিতে থাকবে সেই সংখ্যা দ্বারা) গুণ করেছি তবে শেষ সংখ্যা পর্যন্ত 4 এর ঘাত
এক-এক করে বৃদ্ধি পেয়েছে,এবং সব কয়টি সংখ্যার যোগফলই হচ্ছে দশমিক সংখ্যা।
মজার না?সংখ্যা ভেঙ্গ আবার গড়ে তোলা?
একটা সমস্যা দিয়ে শেষ করি।
1.(28)3=(?)7
সত্যি হোক গণিতের স্বপ্নযাত্রা...
No comments