ব্যাটারি কীভাবে কাজ করে?

ব্যাটারি কীভাবে কাজ করে?


আমাদের জীবনে ব্যাটারির প্রয়োজনীয়তা যে কত তা বলে শেষ করা যাবে না।কিন্তু ব্যাটারি কাজ করে কীভাবে?তার আগে দেখে আসি ব্যাটারি সৃষ্টির ইতিহাস।

১৭৮০ সালের কথা।ইতালির শরীরতত্বের অধ্যাপক লুইগি গ্যালভানি। শরীরতত্বের অধ্যাপক হওয়ায় তিনি একবার ব্যাঙ নিয়ে গবেষণা করছিলেন।একটা মরা ব্যাঙ লবণ পানিতে চুবিয়ে দুটি আলাদা ধাতুর দন্ড দিয়ে স্পর্শ করাতেই তা নড়ে ওঠে!তিনি ভাবলেন প্রাণীদেহের অভ্যান্তরে হয়ত কোন রকম বিদুৎ জমা থাকে তাই হয়ত পা নড়ে উঠেছিল।তিনি তা সবার সামনে প্রকাশ করলেন।কিন্তু একজন এর বিরোধিতা করলেন।তার নাম আলেজান্দ্রো ভোল্টা।

তিনি একটি পরীক্ষা করলেন যাকে ইংরেজিতে বলে Ground Breaking Experiment. তার ধারণা সঠিক কিনা তা পরীক্ষার জন্য ছোট দালানের মতো  বানালেন।যা দেখতে ছিল চিত্র ১ এর মতো।যেখানে কয়টি স্তর ছিল যেগুলোর স্তর সমূহ ২ ভাগে বিভক্ত ছিল।একভাগে ছিল জিঙ্ক এবং আরেক ভাগে ছিল কপার।তারপর এক স্তর শেষ হওয়ার পর তার ওপর ছিল কাগজ।

তা না হয় হলো কিন্তু চার্জ আসলো কোথা থেকে?

আমাদের তাকাতে হবে একটা স্তরের দিকে(চিত্র ২ দ্রষ্টব্য)।

আগে আমদের একটা জিনিস জানতে হবে।আমরা জারন বিজারন এর নাম শুনিছে।ভয় পাবেন না আমি বইএর জারণ বিজারণ নিয়ে বিস্তারিত বলতে যাচ্ছি না।সহজ কথায় যদি কোন মৌল ইলেকট্রন ছেড়ে দেয় তাহলে তাকে বলে জারণ।আর যে মৌল ছেড়ে দেওয়া  ইলেকট্রন গ্রহন করে তাকে বলে বিজারণ।আমরা দেখেছি ভোল্টা সাহেব প্রতি স্তরে জিঙ্ক এবং কপার নিয়েছিল(এটা একই স্তরে ঘটবে না পাশাপাশি স্তরে ঘটবে ভালভাবে বুঝতে চিত্র ২ দেখুন)। আর এখানে জিংক ইলেকট্রন ত্যাগ করবে (মানে জারণ ঘটবে!)আর কপার সেই ইলেকট্রন গ্রহন করবে(মানে বিজারণ ঘটবে!)। খেয়াল করুণ জারণ বিজারণ ঘটার সময় ইলেকট্রণের প্রবাহ ঘটবে আম আমরা জানি ইলেকট্রনের প্রবাহই বিদুৎপ্রবাহ!এখন আপনি ইলেকট্রন যে পথে চলছে(যাতে আমরা বর্তনী বলি!) সেখানে যদি লাইট লাগান তা জ্বলে উঠবে(যদিও ব্যাটারি আরো শক্তি সম্পন্ন হতে হবে) নিজের কাজে নিজেই বিষ্মিত হলেন আলেজান্দ্রো ভোল্টা।তিনি আবিষ্কার করে ফেললেন ব্যাটারি।

 ১৭০০ সালে অন্য বিজ্ঞানীরা আজকের ড্রাই সেলের রুপ দিলেন ।আমরা যার সুবিধা সবসময় পেয়ে আসছি। 

আমরা যে মোবাইল,ল্যাপটপে এবং অন্যান্য ইলেকট্রিক যন্ত্রপাতিতে যে ব্যাটারি চার্জ দেই কীভাবে?

আগে আমাদের দেখতে হবে ব্যাটারির চার্জ শেষ হয় কীভাবেআমাদের যেতে হবে চিত্র ২ এ।আমরা দেখেছি যে জারণ বিজারণ প্রক্রিয়ায় ইলেকট্রন প্রবাহিত হয় অর্থাৎ এখানে বিদুতের জন্ম হয়।জিঙ্ক যখন ইলেকট্রন ছেড়ে দেয় তখন কপার ইলেকট্রন নিতে থাকে।কিন্তু তা একসময় শেষ হয়ে যায়।আমাদেরও মাথা গরম হয় আমরা বলি চার্জ শেষ!যাই হোক আমরা মোবাইল বা অন্য কোন ডিভাইস যখন চার্জার কানেক্ট করি তা কিন্তু আবার ব্যবহার করা যায়।

কিন্তু তা চার্জ নেয় কীভাবে?

আসলে তা চার্জ নেয় না।আমরা যখন মোবাইল বা অন্য কোন ডিভাইস যখন চার্জার কানেক্ট করি তখন আসলে কপার যে ইলেকট্রন গুলো নিয়েছিল তা চার্জার কানেক্ট করার মাধ্যমে জিঙ্কে ফিরে যায়!

তা না হয় বুঝলাম।কিন্তু আমরা অনেক সময়ই এমন অভিজ্ঞতার শিকার হই যে আমাদের ইলেকট্রিক ডিভাইসের ব্যাটারি আর কাজ করে না যাকে আমরা বলি ব্যাটারি ডাউন হওয়া।

আসলে নির্দিষ্ট সংখ্যক বার ব্যাটারি চার্জ দেওয়ার পর কপার থেকে ইলেকট্রন নিয়মিত ভাবে ফেরত যেতে পারে না।যার ফলে ইলেকট্রন আর যেতে পারে না ।তখন জারন বিজারণও ঘটে না।তাহলে বিদুৎ এর প্রশ্নই আসে না! 

 

আব্দুল্লাহ সাম্য

সোহাগপুর সরকারি এস.কে. পাইলট মডেল উচ্চ বিদ্যালয়


No comments

Theme images by dino4. Powered by Blogger.