সুপার সিমেট্রির আদ্যপান্ত

সুপার সিমেট্রির আদ্যপান্ত

অনেকে বেশ ভংচং করে বলতে পারে যে-‘আমাদের জগতের মাত্রা ৩টা’। বেশ, আবার যারা আমার মতো বিজ্ঞান নিয়ে ঘাটাঘাটি করে, তারা সুন্দরমতো বলবে-‘না বাছা, মাত্রা ৪টা। আইনস্টাইন মহাশয় আপেক্ষিকতা তত্ত্ব দিয়া তাহা বলিয়া গিয়াছেন।’ কিন্তু যারা এতেও সন্তুষ্ট না, তারা পদার্থবিজ্ঞান নিয়ে ঘাটাঘাটি করে, তারা বেশ গম্ভীরভাবে বলবে-‘ বাছাধন, তোমরা সবাই ভুল। মাত্রা ১১টি।

“দৃশ্যমান” ৪টি মাত্রার বাইরে অন্য ৭টি মাত্রা খুব “সংকুচিত” অবস্থায় আছে।’তবে, এখানে সুপারসিমেট্রির অবদান অস্বীকার করলে তো চলবে না। তবে সব কথার এক কথা, এই সুপারসিমেট্রি টা কী?
আচ্ছা, সিমেট্রি কী? হ্যাঁ, সিমেট্রি হচ্ছে একটা সরলরেখাকে প্রদত্ত আকৃতি বরাবর ভাগ করার পর এবং তারপর সে আকৃতিটাকে (কল্পনায়) ভাঁজ করার পর যদি মিলে যায়, তাইলে বুঝা যায় যে প্রতিসমতা বা সিমেট্রি আছে। তবে পদার্থবিজ্ঞানের জগতে সুপারসিমেট্রি মূলত ২টা “মৌলিক” কণার মধ্য “প্রস্তাবিত” প্রতিসমতা বা সহজ কথায় তাদের মধ্যে রিলেশন বুঝায়। এখন, আগেই বলে নিই যে পৃথিবীতে অসংখ্য কণা আছে, তবে সবগুলোকে ২টা মৌলিক কণার আওতায় রাখা হয়, সেই দুইটা হলো- ‘ফারমিওন’ ও ‘বোজন’। 
ফারমিওন কণা ভারি দুষ্টু। এ কণাগুলা একই সময় ভিন্ন জায়গায় থাকতে পারে, এমনকি এদের ধর্ম ও আলাদা! অন্যদিকে বোজন কণা খুব সহজেই এক জায়গায় চুপচাপ থাকে এবং তাদের মধ্যে বৈশিষ্ট্য বা ধর্ম একই থাকে। এই বিষয়াদি কোয়ান্টাম মেকানিক্স এ বিস্তারিত আছে। এখন, এখানে বোজন কণা আমাদের খুবই গর্বের বিষয়, কারণ আমাদের বাঙালি বিজ্ঞানী সত্যেন্দ্রনাথ বসুর নামাকরণে এই বোজন কণা নামকরণ করা হয়েছে। যাই হোক, এই সুপারসিমেট্রি টা কে বলা হয়-“ বর্তমান কণা পদার্থবিজ্ঞানের সমস্যার সমাধান।” এইটা হলো স্ট্যান্ডার্ড মডেল এর বিস্তৃত বিষয় এবং অনেক প্রবাহ সমস্যার সমাধান করা যেতে পারে-যেমনঃ গজ থিওরি। স্ট্যান্ডার্ড মডেল হলো সব কণার ধর্ম গুলোকে(ভর বাদে) একত্র করার প্রয়াস। 
এই সুপারসিমেট্রিতে বেশ কয়টা গ্রুপ থাকে, আর এই গ্রুপ এ যে কণা থাকে তাদের “সহকারী” একটা কণা থাকতে পারে, যাকে বলে সুপার-পার্টনার। এখন, নতুন কণার ভবিষ্যৎবাণীতে এই সুপার-পার্টনার বেশ কাজে দেয়, কারণ এই সুপার-পার্টনার তো নতুন একটা কণাও হতে পারে!!  যেমন- ধারণা করা হয় যে, বোজন কণার সুপার-পার্টনার হতে পারে সিলেকট্রন, যা এখনো অনাবিষ্কৃত।এবং তাদের কোয়ান্টাম সংখ্যাও সমান থাকে। কোয়ান্টাম সংখ্যা হলো ইলেকট্রনের কক্ষপথের আকার,আকৃতি, ত্রিমাত্রিক(থ্রিডি) দিক এবং নিজ অক্ষের ওপর ঘূর্ণনের দিক। এই চারটিকে একত্রে কোয়ান্টাম সংখ্যা বলে। যাই হোক, আমি আগেই বলেছি, এখনো বলছি, যে এইটা প্রস্তাবিত। মানে শুধুমাত্র এক্সেলেটের এর বাইরে এর প্রমাণ পাওয়া যায় নি। এবং সবচেয়ে বড় কথা- স্ট্যান্ডার্ড মডেল এর বাইরে এর কার্যকারিতা কতটুকু তাও যুক্তির প্রশ্ন। 
আলোচনা এইটুকুতেই সীমাবদ্ধ রাখি। কারণ এই বিষয়ে আলোচনা করতে হায়ার লেভেলের জিনিসপত্র সম্বন্ধে আইডিয়া থাকতে হয়। তবে সর্বোপরি আগ্রহই আসল। বলা হয়, মানুষ তার সপ্নের সমান বড়। আমি বলব-“ মানুষ তার আগ্রহের সমান বড়।”


লিখেছেনঃ
ফাহিম ফয়সাল আবির
আর্মড পুলিশ ব্যাটালিয়ন পাবলিক স্কুল এন্ড কলেজ, বগুড়া 

No comments

Theme images by dino4. Powered by Blogger.